পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

পাখি ইলেকট্রিক তারে বসলে মরে না কেন?

#পাখি_ইলেকট্রিক_তারে_বসলে_মরে_না_কেন?
আমরা সবাই ছোটবেলা থেকে জেনে আসছি যে,
ডিম পাড়া প্রাণী কারেন্ট শক খায়না, তাই পাখি কারেন্টের তারে বসলে মরে না।
কিন্তু আপনি জানেন কি? তথ্যটা একেবারে ভুল।
সত্য কথা হলো পাখিরাও কারেন্ট শক খায়।
#আসুন_জানা_যাক_ব্যাপার_টা_কি?
#কারেন্টের_ধর্মঃ
কারেন্ট হলো মূলত ইলেকট্রনের প্রবাহ। এটি ধাতব তারের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। যে তার কারেন্টের উৎসের সাথে যুক্ত থাকে তাকে ধনাত্মক লাইন আর যে তার দিয়ে উৎসে ফিরে যায় তাকে
ঋনাত্নক লাইন বা আর্থিং বলে।
#কারেন্ট_শক_কি?
প্রাণিদেহে যে সকল পেশীকলা আছে তাদের ধর্ম হলো কারেন্ট শক পেলে সংকুচিত হওয়া। এই ধর্ম কাজে লাগিয়ে দেহ পেশীকলা থেকে কাজ আদায় করে নেয় ফলে দেহ সচল থাকে। কিন্তু দেহ যে পরিমাণ কারেন্ট উৎপন্ন করে তার বেশি কারেন্ট দেহে প্রবেশ করলেই দেহ অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে পরে ফলে পেশীর অতিসংবেদনশীলতার  দরূন প্রাণী কারেন্টের তার থেকে ছিটকে যায় বা দেহে ঝাকুনি হয় এই ঘটনাকে বলে কারেন্ট শক।
#কারেন্ট_শকে_প্রাণী_মরে_কেন?
প্রাণীদের হৃদপিন্ডে যে পেশীকলা থাকে তা সর্বদা কাজ করে কখনো বিশ্রাম করে না। এর কারণ হলো কারেন্ট শক। হৃদপিন্ডের পেসমেকার কারেন্ট তৈরি করে এবং পারকিন্জে তন্তুুর সাহায্য সারা হৃদপিন্ডে প্রবাহিত করে ফলে হৃদপিন্ড একসাথে কাজ করে। পেসমেকার শুধু কারেন্ট উৎপন্নই করে না সুইচ হিসেবে কাজ করে কারেন্টের প্রবাহ অন-অফ করে ফলে হৃদপিন্ড ছন্দময় ভাবে কাজ করতে পারে। যদি বাইরে থেকে বিদ্যুৎ দেহে প্রবেশের পর বর্তনী পূর্ণ করে তবে হৃদপিন্ডে কারেন্টের অনবরত প্রবাহ চলে এবং হৃদপিন্ডের অন-অফ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় ফলে হৃদপিন্ডের কাজ শুরু হয় কিন্তু শেষ হয়না। একারণে প্রণীর মৃত্যু ঘটে।
#পাখি_কারেন্ট_শক_খায়না_কেন?
কারেন্ট শক খাওয়ার পূর্বশর্ত হলো ধনাত্মক ও ঋনাত্নক লাইন একসাথে স্পর্শ করা বা বর্তনী পূর্ণ করা। কিন্তু পাখি কখনো একসাথে দুই তারে বসে না। এরা হয় শুধু ধনাত্মক নয় শুধু ঋনাত্নক তারে বসে ফলে বর্তনী পূর্ণ হয়না ফলে পাখি মরে না।
পাখির গায়ে পালক থাকে এবং পায়ের চামরার উপরে যে আবরণ খাকে তা বিদ্যুৎ অপরিবাহী এই কারনেও পাখিরা কারেন্ট শক খায়না। তবে পাখির পালক তুলে ফেললে পাখিরা কারেন্ট শক খাবে। এটা একদম সত্য। আবার পাখিরা যদি দুই তারে বসে তবে অবস্যই কারেন্ট শক খাবে।
#কিছু_বিশেষ_তথ্যঃ
#ক)
মানব দেহের ভেতর দিয়ে ১০ মিলি এম্পিয়ার কারেন্ট প্রবাহিত হলে মৃত্যু অবধারিত।
#খ)
মানব দেহে প্রাকৃতিক ভাবে ২ মেগা ওহম রেজিট্যান্স আছে ফলে ১০ মিলিএম্পিয়ার এর নিচে কারেন্ট প্রবেশ করলে কারেন্ট শক করে না।
#গ)
একজন ৭০কেজি ভরের মানুষের দেহে ৭৫ মিলিএ্যাম্পিয়ার ডিসি কারেন্ট এবং এসির ক্ষেত্রে ১৫ মিলিএ্যাম্পিয়ার কারেন্ট প্রবাহিত হলে বৈদ্যুতিক শক অনুভুত হয়।
#ঘ)
বৈদ্যুতিক শক অনুভুতির
মাত্রা নির্ভর করে ভোল্টেজের পরিমাণ,
স্থায়ীত্ব, কারেন্ট প্রবাহের পথ ইত্যাদির উপর।
#ঙ)
উচ্চ ভোল্টেজে (৫০০-১০০০ ভোল্টে) মানুষের দেহের কোষ পুড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।বৈদ্যুতিক শক মানুষের স্নায়ুর উপর প্রভাব ফেলতে
পারে।
#যেমনঃ
স্নায়ু বিকলাংগ হয়ে যেতে পারে।কম ভোল্টেজে (১১০-২২০ ভোল্ট , ৬০হার্জ এসি)মাত্র ৬০ ডিসি কারেন্টকারেন্ট প্রবাহিত হলে মানুষের হৃৎপিন্ডের ক্রিয়া (Ventricular fibrillation)বন্ধ হয়ে যেতে পারে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই।
ডিসি কারেন্টের ক্ষেত্রে এর মান ৩০০-৫০0 মিলিএ্যাম্পিয়ার।
কপি:ইঞ্জিনিয়ার রাউফুল ভাই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন