পৃষ্ঠাসমূহ

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

Follow Us @soratemplates

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

অবদানকারী

শুক্রবার, ৩ আগস্ট, ২০১৮

ক্যাবলের সাইজ নির্ধারন করার নিয়ম

আপনি একজন Electrical Engineer তাই আপনাকে জানতেই হবে,

ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার কিভাবে ক্যাবলের সাইজ নির্ধারণ করবেনঃ

ক্যাবল সাইজ নির্ধারণ করা নিয়ে নানা মত আছে। কারো কারো মতে কোনও ক্যাবল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ক্যাটালগ দেখলেই চলে আবার কারো কারো সিলেকশন পদ্ধতি এতটাই জটিল যে সেটাও অনেক ক্ষেত্রে বাহুল্য হয়ে যায়।
আজ আমি আপনাদের ক্যাবল সিলেকশনের যেই পদ্ধতিটা দেখাব সেটা কারো হুবহু অনুকরণ নয় বরং বেশ কয়েকটা উৎস থেকে পাওয়া তথ্য থেকে আমার বাছাইকৃত পদ্ধতি। আর হ্যাঁ, এটা শুধুমাত্র লো ভোল্টেজ লাইনের ক্যাবল সিলেকশনের পদ্ধতি।

ক্যাবল সিলেকশন এ আমাদের কয়েকটা ধাপ অনুসরণ করতে হয়। তো, শুরু করা যাক প্রথম ধাপ।

ক্যাবল
লোড কারেন্ট নির্ণয়ঃ এই ধাপটা সহজ। এই ধাপে আমাদের লোড কারেন্ট বের করতে হবে আর তার জন্য আমাদের সবগুলো লোডের সম্মিলিত পাওয়ার বের করতে হবে। ধরি, এটা একটা বিল্ডিং এর ওয়ারিং। সকল বাসার সকল যন্ত্রপাতির পাওয়ার যোগ করে আমরা পেলাম ৫৩০০ ওয়াট । এখন এটা তো আমরা সবাই অনুমান করতে পারি যে, বাসাবাড়িতে প্রতিনিয়ত লোডের পরিমান বাড়ছে কারন আমাদের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যাবহারের প্রবণতা বাড়ছে এবং কোনও কিছু আমরা একবার ব্যাবহার করে অভ্যস্ত হয়ে গেলে ঐ যন্ত্রটি ছাড়া পরে আমাদের আর চলে না যার কারনে যন্ত্রপাতির পরিমান আর কমে না বরং দিন দিন বাড়ে। তাই বাসাবাড়ির ওয়ারিং এ ভবিষ্যৎ লোডের কথা মাথায় রেখে আমাদের ক্যাবল সিলেকশন করতে হবে।আমাদের এই ক্ষেত্রে বিল্ডিং এর মালিকই সবচেয়ে ভাল বলতে পারবেন যে ভবিষ্যতে তিনি কি করতে পারেন। হতে পারে তিনি তার ৪ তলা ভবনটিকে ১০ তলা করবেন অথবা কিছুই করবেন না। এই লোড বৃদ্ধির পরিমানের বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে আর যদি তা না হওয়া যায় তবে ২০% অতিরিক্ত লোড ধরে নিতে হবে এবং এই ২০% অতিরিক্ত লোড ধরে নিয়ে ক্যাবল সিলেকশন করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

তো , এক্ষেত্রে আমাদের আমাদের উদাহরন অনুযায়ী সর্বমোট লোড হচ্ছে = {৫৩০০+(৫৩০০*২০/১০০)} = ৬৩৬০ ওয়াট; অতএব, মোট কারেন্ট = { ৬৩৬০/(২২০*০.৯)} = ৩২.১২ এম্পিয়ার( পাওয়ার ফ্যাক্টরকে ০.৯ ধরে); এবার পরের ধাপ।

ওয়ারিং পদ্ধতি ও ক্যাবল নির্ণয়ঃ যেহেতু আমরা এখানে সিঙ্গেল ফেজ লাইন নিচ্ছি তাই আমাদের তার টানতে হবে দুইটি। এখন এই তার কিভাবে টানা হবে তার একটা প্রভাব আছে ক্যাবলের রেটেড এম্পিয়ারের উপর।আমরা জানি যে ক্যাবল এর ভেতর দিয়ে কারেন্ট গেলে ক্যাবল গরম হয় আর এই উত্তাপ ক্যাবল থেকে যতটা ছড়িয়ে পড়বে তত ভাল কারন এতে ক্যাবল ঠাণ্ডা থাকবে। কিন্তু যেই তারটা আমরা ছিদ্রযুক্ত ট্রের উপর দিয়ে টেনে নিচ্ছি সেই তারটা ঠাণ্ডা হবার জন্য যেই পরিমান বাতাস পাচ্ছে, দেয়ালের ভেতর দিয়ে টানা তারটি সেই হিসেবে কোনও বাতাস পাচ্ছে না কিন্তু দেয়ালের বাইরে দিয়ে কোনও পাইপের মধ্য দিয়ে টানা তার কিছুটা বাতাস পাচ্ছে কিন্তু তা ট্রের উপর দিয়ে টানা তার থেকে কম। এটাই হচ্ছে ওয়ারিং এর প্রভাব।

ধরি, আমাদের উদাহরনের তার টানা হবে কোনও দেয়ালের ভেতর দিয়ে। এক্ষেত্রে আমার দেয়া লিঙ্ক এর বই( লিঙ্ক ঃ http://www.aeicables.co.uk/literature/CurrentRatings.pdf) অনুযায়ী আমাদের ক্যাবল লাগবে ৬ স্কয়ার মিঃমিঃ এর বা ৬ আর এম এর যার এম্পিয়ার রেটিং হচ্ছে ৩৪ এম্পিয়ার। এবার আসি তৃতীয় ধাপ এ।(লিঙ্ক এ দেয়া বই এর ০৬ নং পেজ ফলো করবেন)।

পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রাঃ বিদ্যুৎ পরিবাহি ক্যাবলের আশেপাশে যা থাকবে তার মধ্য দিয়েই ক্যাবল তাপ নির্গত করতে চাইবে তাই পদার্থ বিজ্ঞানের নিয়ম অনুযায়ী আমরা বুঝতে পারি যে ক্যাবলের আশেপাশের তাপমাত্রার উপর নির্ভর করবে ক্যাবল কত দ্রুত ঠাণ্ডা হবে। আমাদের উদাহরনে ক্যাবল টানা হচ্ছে দেয়ালের ভেতর দিয়ে যার তাপ পরিবহন ক্ষমতা খুবি নিম্ন মানের। ফলে, দেয়ালের ভেতর দিয়ে কারেন্ট যাওয়ার কারনে উদ্ভুত তাপ দেয়ালের ভেতরেই থেকে যাবে যার ফলে বলা যায় যে ক্যাবলের পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। ধরি , এক্ষেত্রে এই তাপমাত্রা হচ্ছে ৪০’ সেন্টিগ্রেড। এখন , বিভিন্ন তাপমাত্রার জন্য ক্যাবলের একটা নির্দিষ্ট গুনিতক আছে যেটা চার্টের নিচের দিকে দেয়া আছে। এই ধাপে আমাদের কাজ হচ্ছে এই গুনিতক দিয়ে ক্যাবলের এম্পিয়ার কে গুন দেয়া। তো, আমরা আমাদের উদাহরনের এম্পিয়ার কে গুন দিয়ে পাই = (৩৪*০.৮৭)=২৯.৫৮ এম্পিয়ার। এখানে ০.৮৭ হচ্ছে ৪০’ সেন্টিগ্রেডে কোনও ক্যাবলের গুনিতক।

এক্ষেত্রে, দেখা যাচ্ছে, ক্যাবলটি আমাদের মোট কারেন্ট নিতে সক্ষম নয়। যার ফলে, আমাদের এক সাইজ উপরের ক্যাবল নির্ধারণ করতে হবে এক্ষেত্রে যেটা হচ্ছে ১০ আর এম এর ক্যাবল যার কারেন্ট বহন ক্ষমতা হছে ৪৬ এম্পিয়ার। তো, আমরা আমাদের তাপমাত্রার গুনিতক দিয়ে একে গুন করলে পাই =(৪৬*০.৮৭)=৪০.০২ অর্থাৎ ৪০ এম্পিয়ার। অর্থাৎ আমরা এই ক্যাবলটি ব্যাবহার করতে পারি।

ভোল্টেজ ড্রপ নির্ণয়ঃ এটাই আমাদের শেষ ধাপ। এই ধাপে আমাদের বের করতে হবে আমাদের ফুল লোড কারেন্ট যাওয়া অবস্থায় ক্যাবলের ভেতর ভোল্টেজ ড্রপ কত হয়। এর জন্য আমাদের জানা প্রয়োজন যে এক এম্পিয়ার কারেন্ট যদি এক মিটার দীর্ঘ কোনও নির্দিষ্ট ক্যাবল দিয়ে যায় তবে ঐ ক্যাবলে কত ভোল্টেজ ড্রপ হবে। আমাদের এর জন্য কঠিন কিছু করতে হবে না। গবেষকরা বিভিন্ন আরএমের ক্যাবলের জন্য এটা পরিমাপ করে দেখেছেন এবং তার চার্ট তৈরি করেছেন । চার্টটি আমার দেয়া লিঙ্ক এর বই এ পাবেন। আর এই মানকে প্রকাশ করা হয় mV/A/M, এই এককে।

এখন আমাদের মোট কারেন্ট হচ্ছে ৩৪.১২ এম্পিয়ার আর আমরা ব্যাবহার করছি ১০ আর এম এর ক্যাবল যার ভোল্টেজ ড্রপ হচ্ছে 4.44 mV/A/M. ধরি, আমাদের ক্যাবলের মোট দৈর্ঘ্য ৩০ মিটার।অতএব, ৩৪.১২ এম্পিয়ার কারেন্ট প্রবাহে এই ক্যাবলে ভোল্টেজ ড্রপ হবে =(০.০০৪*৩৪.১২*৩০)=৪.৫৪ ভোল্ট।

এখন, IEEE এর নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহকারী পয়েন্ট থেকে কোনও স্থাপনা পর্যন্ত ভোল্টেজ ড্রপ সাপ্লাই ভোল্টেজ এর ২.৫% এর চেয়ে যেন বেশী না হয়। এখন আমাদের উদাহরন এ আমাদের সাপ্লাই ভোল্টেজ ২২০ ভোল্ট যার ২.৫% হয় ৫.৫ ভোল্ট যা ৪.৫৪ ভোল্ট থেকে বেশী । তার মানে আমাদের ওয়ারিং এর জন্য এই ক্যাবলটি ঠিক আছে।
যদি এই ভোল্টেজ ড্রপের মান অনুমদিত মানের থেকে বেশী হয়ে যায় তবে আমাদের আরও এক সাইজ বড় ক্যাবল নির্বাচন করতে হবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত এই মান সাপ্লাই এর ২.৫% এর ভেতর না আসবে ততক্ষন পর্যন্ত ক্যাবলের মান বাড়াতে হবে।

আমরা শিকতে চাই শিখাতে চাই
কোন ভুল থাকলে সংশোধন করা হবে

Engr Rafikul Islam
Admin
EEE power bridge.

কোন মন্তব্য নেই: